ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
আপডেট: সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
গতকাল রোববার রাতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগে যুক্ত হয়ে জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এদের কয়েকজনকে রক্ষা করতে ছাত্রশিবির নেতা আবু সাদিক কায়েম সক্রিয়ভাবে তদবির করেছেন।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বিস্তারিত জবাব দিয়েছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।
আবদুল কাদের বলেন,
“আওয়ামী লীগ শাসনের সময় হলে টিকে থাকতে গিয়ে কিছু শিবিরকর্মী ছাত্রলীগে সক্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এসব লোক সরাসরি হামলায় যুক্ত ছিল। সাদিক কায়েম এমন কয়েকজনকে বাঁচাতে বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করেছেন।”
তিনি কয়েকটি স্ক্রিনশট ও নাম উল্লেখ করে দাবিও করেন, জুলাইয়ের পর এসব ব্যক্তিদের নামে মামলার তালিকা প্রস্তুতের সময় সাদিক কায়েম হস্তক্ষেপ করেছিলেন।
সাদিক কায়েম তার জবাবে লেখেন:
“ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচানোর ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি কেবল কয়েকটি অভিযোগ ফরওয়ার্ড করেছিলাম, যাতে নিরপরাধ কেউ হয়রানির শিকার না হয়।”
তিনি জানান,
“গণহারে মামলা দায়েরের সময় বহু অভিযোগ এসেছিল, যেখানে বলা হচ্ছিল তারা ছাত্রলীগের সাথে থাকলেও কোনো অপরাধে যুক্ত ছিলেন না। এসব অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য আমি এনসিপি নেতাদের কাছে ফরওয়ার্ড করি।”
১. দুইটি কনসার্ন: অপরাধীর বিচার ও নিরপরাধ ব্যক্তির নিরাপত্তা
২. ভূমিকা ছিল যাচাইকারীর: মামলার তালিকা যাচাই করতে এনসিপি নেতা আরমান ও মাহিনের কাছে কয়েকটি নাম ফরওয়ার্ড করেন
৩. যাদের নাম স্ক্রিনশটে, তারা শিবিরের কেউ না
৪. সাঈদী নামে একজনকে বাঁচাতে ফোন করার অভিযোগকে "মিথ্যা" বলেন
৫. একজন শাহাদাতকে চিনেন না, তার ব্যাপারে কোনো যোগাযোগও করেননি
৬. 'ছাত্রলীগে লুকানো শিবির' বিবৃতি রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত বলে দাবি
৭. সাবেক শিবিরকর্মীদের অপকর্মের দায় শিবির নিতে পারে না
সাদিক কায়েমের কথায়,
“জীবনের এক ধাপে কেউ শিবিরে থেকেও পরে ছাত্রলীগে গিয়ে অপকর্ম করলে, তার দায় কি শিবিরের হবে? তাহলে তো বাগছাস-এনসিপিতে যাওয়া সাবেকদের সব কৃতকর্মের দায়ও শিবিরকে নিতে হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে মামলার তালিকা তৈরি এবং ‘কে অপরাধী, কে নিরপরাধ’—এই বিতর্ক এখন রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে।
এটি একদিকে আন্দোলনকারীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, অন্যদিকে বাম, ইসলামী ও মূলধারার ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিদ্যমান অবিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।
এখনও পর্যন্ত আবদুল কাদের কিংবা এনসিপির পক্ষ থেকে সাদিক কায়েমের জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্দোলনের পরবর্তী ধাপের অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে হলে তথ্য যাচাইয়ের বিষয়ে স্বচ্ছ ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন, নইলে এই ধরনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আন্দোলনের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
#ছাত্রশিবির #ছাত্রলীগ #আবদুল_কাদের #সাদিক_কায়েম #জুলাই_আন্দোলন #ঢাকা_বিশ্ববিদ্যালয় #ছাত্ররাজনীতি #নিরপরাধ_নাকি_অপরাধী