প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপির ৩ পৃষ্ঠার চিঠি: নিরপেক্ষতা, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন

শনিবার (২৪ মে) দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিটি গণমাধ্যমে আসে।

📌 মূল অভিযোগ: ‘নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ’

চিঠিতে বিএনপি বলেছে,

“ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জনগণ নিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কার আশা করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।”

বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণের দাবিও জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়,

“সরকারে থাকা কিছু উপদেষ্টার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং বক্তব্য সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”

🚫 মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর: ‘দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নয়’

বিএনপি চিঠিতে চট্টগ্রাম বন্দর ও মানবিক করিডর ইস্যুতেও আপত্তি জানিয়েছে। তারা বলছে,

“জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।”

🗳️ নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে দাবি

বিএনপির ভাষ্য অনুযায়ী,

“নির্বাচন কমিশন গঠনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চলছে।”

তারা দাবি করে,

“একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।”

এছাড়া ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথ দ্রুত নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

🛑 ‘একটি মহল’ সংস্কারের বিরুদ্ধে

বিএনপি চিঠিতে অভিযোগ করেছে,

“একটি পক্ষ সংস্কারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সরকার যেন তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।”

⚖️ বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে

চিঠির একাংশে বলা হয়,

“সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিচার চালিয়ে যেতে হবে।”

🧾 চিঠির মূল বার্তা ও সতর্কবার্তা

চিঠির শেষাংশে বিএনপি উল্লেখ করে,

“যদি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন বিষয়ে কার্যকর অগ্রগতি না হয়, তবে সরকারকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন হতে পারে।”

তারা আরও লিখেছে,

“রাষ্ট্র পরিচালনায় ঐক্যমত্য নিশ্চিত না হলে, আইনশৃঙ্খলা, মূল্যস্ফীতি ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে উঠতে পারে।”

📌 সংক্ষেপে বিএনপির চিঠির ৫টি প্রধান দাবি:

1. সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ

2. মানবিক করিডর ও বন্দর ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া সিদ্ধান্ত না নেওয়া

3. অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা

4. নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও বৈধতা রক্ষা

5. বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়া একসঙ্গে চালানো