ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১০:০২ এএম
আপডেট: সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১০:০২ এএম
ট্রাম্প হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ৮ আগস্টের মধ্যে রাশিয়া যদি শান্তি চুক্তিতে না আসে, তাহলে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এর আগে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করে তিনি রাশিয়ার প্রতি বার্তা দিয়েছেন।
ট্রাম্প জানান, সম্প্রতি রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে এক অনলাইন বাকযুদ্ধে জড়ানোর পর তিনি দুটি সাবমেরিন মোতায়েন করেছেন, যেগুলো এখনও “ওই অঞ্চলে” অবস্থান করছে। যদিও সাবমেরিনগুলো পারমাণবিক অস্ত্রবাহী কিনা, বা সেগুলোর নির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলেননি।
তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের বক্তব্য একদিকে রাশিয়াকে চাপ প্রয়োগের কৌশল, অন্যদিকে এটি পারমাণবিক উত্তেজনার ঝুঁকিপূর্ণ ইঙ্গিত।
রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন:
“আমার মনে হয়, আগামী সপ্তাহের বুধ অথবা বৃহস্পতিবার উইটকফ রাশিয়া সফরে যাবেন।”
যখন এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, উইটকফ কী বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন, ট্রাম্প উত্তর দেন:
“হ্যাঁ, এমন একটি চুক্তি হোক, যেন মানুষ হত্যা বন্ধ হয়।”
ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্তরের শুল্ক ও বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে, যার প্রভাব পড়বে চীন, ভারতসহ রাশিয়ার বড় বাণিজ্য অংশীদারদের ওপরেও। এমনকি চীনা বন্দর হয়ে রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি থামাতেও নতুন নীতিমালা আনতে পারেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ শুধু রাশিয়াকেই নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতিকেই অস্থিতিশীল করতে পারে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত শুক্রবার বলেন, তিনি শান্তি চান, তবে ইউক্রেনে আগ্রাসন থামাতে হলে কিছু শর্ত মানতে হবে:
ইউক্রেনকে দখলকৃত অঞ্চলসমূহ ছেড়ে দিতে হবে
ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করতে হবে
ওয়াশিংটনের একটি সূত্র বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন পুতিনের এই অবস্থানকে "অবাস্তব ও আলোচনার অযোগ্য" হিসেবে দেখছে।
উল্লেখযোগ্য যে, স্টিভ উইটকফ অতীতেও ক্রেমলিনের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। ট্রাম্পের প্রথম দফা প্রেসিডেন্সিতে উইটকফকে অব্যাহতভাবে ইউরোপীয় নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যাক-চ্যানেল কূটনীতিতে ব্যবহার করা হতো। তবে ট্রাম্পের রাশিয়ান নীতি স্থবির হয়ে পড়ার পর এ সংযোগ দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিল।
এ সফরের মাধ্যমে উইটকফ ও পুতিনের মধ্যে নতুন করে আলোচনার সূচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ট্রাম্প নিজের অবস্থানকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তিনি বারবার দাবি করে আসছেন,
“আমি ক্ষমতায় গেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেব।”
কিন্তু বাস্তবে তার ওই প্রচেষ্টা বারবার পুতিনের অনড় অবস্থানে ভেস্তে যাচ্ছে। এর ফলে এখন ট্রাম্পের কণ্ঠে উচ্চমাত্রার চাপ, হুমকি ও পারমাণবিক ইঙ্গিত স্পষ্ট।
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
বিশেষ দূতের নাম | স্টিভ উইটকফ |
সফরের সময় | আগামী সপ্তাহে (বুধ/বৃহস্পতিবার) |
উদ্দেশ্য | ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা |
ট্রাম্পের সময়সীমা | ৮ আগস্টের মধ্যে চুক্তি, না হলে নিষেধাজ্ঞা |
রাশিয়ার অবস্থান | শান্তির পক্ষে, তবে দখলকৃত অঞ্চল ছাড়তে নারাজ |
সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা | দ্বিতীয় স্তরের শুল্ক; চীন ও ভারতকেও টার্গেট |
সামরিক চাপ | সাবমেরিন মোতায়েন (অস্ত্রধারিতা অজ্ঞাত) |
“ট্রাম্প নির্বাচনের আগে কূটনৈতিক সুবিধা নিতে চাচ্ছেন। তবে এই চেষ্টায় পারমাণবিক ইঙ্গিত ও দ্বিতীয় স্তরের নিষেধাজ্ঞার হুমকি বিশ্ব ব্যবস্থাকে আরও অনিশ্চয়তায় ফেলছে।”
— ড. এলেনা বেনেট, স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউট
🔚 উপসংহার:
উইটকফের সফর নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজর মস্কোর দিকে। রাশিয়া কি নতুন আলোচনায় যাবে, নাকি ট্রাম্পের আল্টিমেটাম বিশ্ব রাজনীতিতে আরও অস্থিরতা ডেকে আনবে—সে প্রশ্নের উত্তর মিলবে চলতি সপ্তাহেই।
#ট্রাম্প #রাশিয়া #স্টিভউইটকফ #ইউক্রেন_যুদ্ধ #পারমাণবিক_উত্তেজনা #পুতিন #বিশ্বরাজনীতি