মোদির বৈঠক বয়কট করলেন মমতা: ‘বাংলাকে অপমানের বৈঠকে কেন যাব?’

শনিবার (২৪ মে) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীবর্গ, কিন্তু অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা।

🔙 পূর্বপ্রেক্ষাপট: মাইকের অপমান ভুলেননি মমতা

গত বছর (২০২৪ সালের ২৭ জুলাই) নীতি আয়োগের একটি বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জী, তবে সেই বৈঠকের মাঝপথে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, তার বক্তব্য চলাকালে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এ বিষয়ে বলেন:

“যেখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা বলা হয়, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়? মমতা ব্যানার্জী কেন অপমানিত হতে সেখানে যাবেন?”

🗣️ তৃণমূলের অভিযোগ: ‘বাংলার প্রতি অবিচার’

তৃণমূল কংগ্রেসের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার বারবার পশ্চিমবঙ্গকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করছে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে যথাযথ সম্মান দিচ্ছে না। জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন:

“বাংলার বঞ্চনার কথা বারবার বললেও কেন্দ্র উদাসীন। নীতি আয়োগে বাংলার কথা বলার সুযোগ যদি সত্যিই না থাকে, তবে ওই বৈঠকে যাওয়া মানে আত্মসম্মান বিসর্জন।”

🐘 বিজেপির পাল্টা কটাক্ষ: ‘রাজনৈতিক অভিমান’

অন্যদিকে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী মমতার এই সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক অভিমান’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তার ভাষায়:

“এটা রাজ্যের ক্ষতির সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় প্রকল্প বা বাজেট সুবিধা পাওয়া সম্ভব হতো, কিন্তু মমতা ব্যানার্জী নিজের রাজনৈতিক স্বার্থকে বড় করে দেখছেন।”

তিনি আরও বলেন,

“নীতি আয়োগের বৈঠক কোনো দলীয় মঞ্চ নয়। এটি প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক আলোচনা প্ল্যাটফর্ম।”

📈 নীতি আয়োগ বৈঠকের মূল বিষয়

এবারের বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় ছিল:

• ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা

• ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর অগ্রগতি ও সমন্বয়

• বর্তমান অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ

• রাজ্য-সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা

প্রধানমন্ত্রী মোদি বৈঠকে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কাছ থেকে স্থানীয় সমস্যার বাস্তব প্রতিক্রিয়া ও পরামর্শ চেয়েছেন।

🧭 এখন কী হতে পারে?

• মমতা ব্যানার্জীর এই বয়কট তৃণমূলের কেন্দ্রবিরোধী অবস্থানকে আরও জোরালো করল।

• বাংলার জন্য বাজেট বরাদ্দ ও প্রকল্প অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিতে পারে।

• রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে পারে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে টানাপোড়েন।

📝 উপসংহার

নীতি আয়োগের মতো উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি শুধু প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, এটি কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে গভীর অবিশ্বাসেরও বহিঃপ্রকাশ। সামনের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই দূরত্ব আরও তীব্র হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।